ঢাকা ০১:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুক্তিযোদ্ধাদের তিনটি শ্রেণিতে বিভক্ত করার প্রস্তাব

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:২৫:৪৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর ২০১৯
  • ১৭১ বার

 হাওর বার্তা ডেস্কঃ  মুক্তিযোদ্ধা ও সহযোদ্ধা, সহায়ক শক্তি এবং ভিকটিমস- এই তিন শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধাদের বিভক্ত করে একটি প্রস্তাবনা তৈরি করেছে এ সংক্রান্ত গঠিত সংসদীয় সাব কমিটি। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা পুনঃনির্ধারণ করে একটি খসড়া প্রস্তাবও তৈরি করেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি গঠিত একটি সাব কমিটি।

সোমবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বিষয়টি উপস্থাপন করেছে সাব কমিটি। তবে কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। বৈঠক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এর আগে মূল কমিটির চতুর্থ বৈঠকে মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সামঞ্জস্য করার জন্য মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম (বীর উত্তম)-কে প্রধান করে সাব কমিটি গঠন করা হয়। ওই সাব কমিটি গত ২৫ জুন বৈঠক করে তিন দফা খসড়া সুপারিশ তৈরি করে। ওই বৈঠকে সাব কমিটির সদস্য ছাড়াও বিশেষ আমন্ত্রণে সংসদীয় কমিটির সভাপতি শাজাহান খান ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব শহীদুল হক উপস্থিত ছিলেন।

ওই বৈঠকে মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা নির্ধারণে মুক্তিযোদ্ধাদের তিনটি শ্রেণিবিভাগ করার প্রস্তাব করা হয়। এখানে মুক্তিযোদ্ধা ও সহযোদ্ধা বলতে যারা মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধ করেছেন ও যুদ্ধের সময় যারা যুদ্ধ করতে সহযোগিতা করেছেন তাদেরকে বুঝানো হবে বলে উল্লেখ করা হয়।

সহায়ক শক্তি বলতে যারা মুক্তিযুদ্ধের সময় বিশ্বে জনমত গঠনে সাহায্য করেছেন, মুজিবনগর সরকারের কর্মকর্তা-কর্মচারী, এমএনএ, এমপি, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী ও কলাকুশলী, দেশ ও দেশের বাইরে দায়িত্ব পালনকারী বাংলাদেশি সাংবাদিক, স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের খেলোয়াড়, মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবাপ্রদানকারী মেডিকেল টিমের ডাক্তার, নার্স ও সহকারী প্রভৃতি ব্যক্তিবর্গ এবং ভিকটিমস বলতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের সহযোগীদের দ্বারা নির্যাতিত ব্যক্তিবর্গ ও বীরঙ্গনাদেরকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি প্রস্তাব করা হয়।

এছাড়া সংজ্ঞা নির্ধারণে ভিয়েতনাম ও ফ্রান্সসহ বহির্বিশ্বের স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের সেসব দেশে কিভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয় তা জানা প্রয়োজন বলে বৈঠকের আলোচনায় উঠে আসে।

এদিকে সংজ্ঞা নির্ধারণে পূর্বের বৈঠকের সুপারিশের অগ্রগতির বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কমিটিতে জানানো হয়- মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট আইন-২০১৮ এ মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা নির্ধারণ করা হয়েছে। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন-২০০২ সংশোধনীর লক্ষ্যে যে খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে সেখানেও ট্রাস্ট আইনরে ওই সংজ্ঞা গ্রহণ করা হয়েছে।

তবে এ বিষয়ে আরো সুনির্দিষ্টভাবে সংজ্ঞা পুনঃনির্ধারণের লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্য মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম-এর নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটি ইতোমধ্যে একটি সভায় মিলিত হয়েছে। পরবর্তী সভার দিন ধার্যের অপেক্ষায় রয়েছে। সংজ্ঞা নির্ধারণের বিষয়টি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় হতে পরিচালিত হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাব কমিটির প্রধান রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আমরা সংজ্ঞা নির্ধারণ নিয়ে একটি বৈঠক করেছিলাম। এখনো চূড়ান্ত হয়নি। বিষয়টি নিয়ে কমিটির সভাপতির সঙ্গে আমরা আবার বসে খসড়া নির্ধারণ করবো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে কথা বলবো আমরা।

কমিটির সভাপতি শাজাহান খানের সভাপতিত্বে সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটির সদস্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, রাজি উদ্দিন আহমেদ, মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম (বীর উত্তম), কাজী ফিরোজ রশীদ এবং ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল অংশ নেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

মুক্তিযোদ্ধাদের তিনটি শ্রেণিতে বিভক্ত করার প্রস্তাব

আপডেট টাইম : ০৭:২৫:৪৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর ২০১৯

 হাওর বার্তা ডেস্কঃ  মুক্তিযোদ্ধা ও সহযোদ্ধা, সহায়ক শক্তি এবং ভিকটিমস- এই তিন শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধাদের বিভক্ত করে একটি প্রস্তাবনা তৈরি করেছে এ সংক্রান্ত গঠিত সংসদীয় সাব কমিটি। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা পুনঃনির্ধারণ করে একটি খসড়া প্রস্তাবও তৈরি করেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি গঠিত একটি সাব কমিটি।

সোমবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বিষয়টি উপস্থাপন করেছে সাব কমিটি। তবে কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। বৈঠক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এর আগে মূল কমিটির চতুর্থ বৈঠকে মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সামঞ্জস্য করার জন্য মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম (বীর উত্তম)-কে প্রধান করে সাব কমিটি গঠন করা হয়। ওই সাব কমিটি গত ২৫ জুন বৈঠক করে তিন দফা খসড়া সুপারিশ তৈরি করে। ওই বৈঠকে সাব কমিটির সদস্য ছাড়াও বিশেষ আমন্ত্রণে সংসদীয় কমিটির সভাপতি শাজাহান খান ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব শহীদুল হক উপস্থিত ছিলেন।

ওই বৈঠকে মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা নির্ধারণে মুক্তিযোদ্ধাদের তিনটি শ্রেণিবিভাগ করার প্রস্তাব করা হয়। এখানে মুক্তিযোদ্ধা ও সহযোদ্ধা বলতে যারা মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধ করেছেন ও যুদ্ধের সময় যারা যুদ্ধ করতে সহযোগিতা করেছেন তাদেরকে বুঝানো হবে বলে উল্লেখ করা হয়।

সহায়ক শক্তি বলতে যারা মুক্তিযুদ্ধের সময় বিশ্বে জনমত গঠনে সাহায্য করেছেন, মুজিবনগর সরকারের কর্মকর্তা-কর্মচারী, এমএনএ, এমপি, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী ও কলাকুশলী, দেশ ও দেশের বাইরে দায়িত্ব পালনকারী বাংলাদেশি সাংবাদিক, স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের খেলোয়াড়, মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবাপ্রদানকারী মেডিকেল টিমের ডাক্তার, নার্স ও সহকারী প্রভৃতি ব্যক্তিবর্গ এবং ভিকটিমস বলতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের সহযোগীদের দ্বারা নির্যাতিত ব্যক্তিবর্গ ও বীরঙ্গনাদেরকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি প্রস্তাব করা হয়।

এছাড়া সংজ্ঞা নির্ধারণে ভিয়েতনাম ও ফ্রান্সসহ বহির্বিশ্বের স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের সেসব দেশে কিভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয় তা জানা প্রয়োজন বলে বৈঠকের আলোচনায় উঠে আসে।

এদিকে সংজ্ঞা নির্ধারণে পূর্বের বৈঠকের সুপারিশের অগ্রগতির বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কমিটিতে জানানো হয়- মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট আইন-২০১৮ এ মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা নির্ধারণ করা হয়েছে। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন-২০০২ সংশোধনীর লক্ষ্যে যে খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে সেখানেও ট্রাস্ট আইনরে ওই সংজ্ঞা গ্রহণ করা হয়েছে।

তবে এ বিষয়ে আরো সুনির্দিষ্টভাবে সংজ্ঞা পুনঃনির্ধারণের লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্য মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম-এর নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটি ইতোমধ্যে একটি সভায় মিলিত হয়েছে। পরবর্তী সভার দিন ধার্যের অপেক্ষায় রয়েছে। সংজ্ঞা নির্ধারণের বিষয়টি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় হতে পরিচালিত হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাব কমিটির প্রধান রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আমরা সংজ্ঞা নির্ধারণ নিয়ে একটি বৈঠক করেছিলাম। এখনো চূড়ান্ত হয়নি। বিষয়টি নিয়ে কমিটির সভাপতির সঙ্গে আমরা আবার বসে খসড়া নির্ধারণ করবো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে কথা বলবো আমরা।

কমিটির সভাপতি শাজাহান খানের সভাপতিত্বে সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটির সদস্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, রাজি উদ্দিন আহমেদ, মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম (বীর উত্তম), কাজী ফিরোজ রশীদ এবং ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল অংশ নেন।